[■]বাংলা রচনা: ডিজিটাল বাংলাদেশ ||আমার দেখা ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা||ডিজিটাল বাংলাদেশের ইতিহাস ও লক্ষ্য
বাংলা রচনা: ডিজিটাল বাংলাদেশ
পয়েন্টস:
*ভূমিকা
* ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘােষণা অথবা ডিজিটাল বাংলাদেশের ইতিহাস
* ডিজিটাল বাংলাদেশ ' কী ?
*ডিজিটাল বাংলাদেশে'র সংজ্ঞার্থ(Meaning)
* ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য
*-ডিজিটাল বাংলাদেশ একটি সময়ােপযােগী পদক্ষেপ
* ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় অগ্রাধিকার
* ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্য
* জনগণের রাষ্ট্র
* মৌলিক চাহিদা রাষ্ট্রকেই পূরণ করতে হবে
*রাজনীতির ডিজিটাল ধারা
* ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচি
* অগ্রগতি
* রপকল্প ( ভিশন ২০২১ ) অনুযায়ী কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা
* ডিজিটাল বাংলাদেশ- প্রত্যাশা ও বাস্তবতা
*ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক সর্তকতা
*উপসংহার।
*ভূমিকা
* ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘােষণা অথবা ডিজিটাল বাংলাদেশের ইতিহাস
* ডিজিটাল বাংলাদেশ ' কী ?
*ডিজিটাল বাংলাদেশে'র সংজ্ঞার্থ(Meaning)
* ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য
*-ডিজিটাল বাংলাদেশ একটি সময়ােপযােগী পদক্ষেপ
* ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় অগ্রাধিকার
* ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্য
* জনগণের রাষ্ট্র
* মৌলিক চাহিদা রাষ্ট্রকেই পূরণ করতে হবে
*রাজনীতির ডিজিটাল ধারা
* ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচি
* অগ্রগতি
* রপকল্প ( ভিশন ২০২১ ) অনুযায়ী কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা
* ডিজিটাল বাংলাদেশ- প্রত্যাশা ও বাস্তবতা
*ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক সর্তকতা
*উপসংহার।
ভূমিকা
আধুনিক এই তথ্য - প্রযুক্তির যুগে প্রতিদিন নতুন নতুন তত্ত্ব, তথ্য ও সত্য উদঘাটিত হচ্ছে , মানুষের জীবন এখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর । সময়ের পরিবর্তন এসেছে । রাজনীতি , অর্থনীতি , জলবায়ুর পরিবর্তনসহ নানা কারণে দ্রুত বদলে যাচ্ছে বিশ্বপ্রেক্ষাপট । সেই সঙ্গে সােনার বাংলাদেশেও লেগেছে প্রযুক্তি নামের যাদুর কাঠির ছোঁয়া ।যার নাম 'ডিজিটাল বাংলাদেশ ’। এদেশের মানুষ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে । শুধু স্বপ্নই দেখছে না , স্বপ্ন ও বাস্তবতার আলােকে নানা কর্মকৌশল নির্ধারণ ও বাস্তবে তার প্রয়ােগ শুরু করে দিয়েছে । ফলে , তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়ােগ ও অগ্রগতিতে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ হবে একটি মডেল ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘােষণা||ডিজিটাল বাংলাদেশের ইতিহাস
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ১২ ডিসেম্বর ২০০৮ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘােষণা করে । দলের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘােষণা করেন যে , বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে ২০২১ সালে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হবে । একটি উন্নত দেশ, একটি সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ , একটি ডিজিটাল যুগের জনগােষ্ঠী , রূপান্তরিত উৎপাদন ব্যবস্থা , নতুন ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি সবমিলিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজগঠন — এই সপ্নটাই দেখিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা । নির্বাচনে জয়ী হবার পর আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারের প্রতি অনড় থাকে ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ ’ কী ?
বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মঞ্চ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা উচ্চারিত হওয়ার পর থেকে দেশের বৃহত্তর জনগােষ্ঠী বিষয়টি বুঝার জন্য কৌতূহলী হয়ে উঠেছে । তরুণ প্রজন্ম- যাদের চোখে আগামী দিনের নানা রঙের স্বপ্ন রয়েছে -দারুণভাবে আলােড়িত হয়েছে । তাদের স্বপ্নের পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে । ‘
ডিজিটাল বাংলাদেশের সংজ্ঞার্থ (Meaning from Definition):
ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে সেই সুখী , সমৃদ্ধ দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বৈষম্যহীন জনগণের রাষ্ট্র , এবং যা প্রকৃতপক্ষেই সম্পূর্ণভাবে জনগণের রাষ্ট্র , যার মুখ্য চালিকাশক্তি ডিজিটাল প্রযুক্তি ।
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বরপ ও বৈশিষ্ট্য
ইন্টারনেটে পরিবেশিত তথ্যাবলি পর্যালােচনা করলে দেখা যায় যে , একটি ডিজিটাল দুনিয়া গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া সারাবিশ্বে একটি অবিশ্বাস্য গতিতে বিকশিত হচ্ছে । তথ্যযুগ বা ডিজিটাল যুগ যে নামেই আমরা ডাকি না কেন , কৃষি ও শিল্প যুগের পর মানব সভ্যতার জন্য আসা এ যুগের সার্বিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের একটি উন্নত দেশ হিসেবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের জীবনযাত্রার মান সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর জীবনধারা গড়ে তুলে পুরাে জাতির জন্য একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করাই হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য । এটি বাংলাদেশের জনগণের উন্নত জীবনের প্রত্যাশা স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা । এটি বাংলাদেশের সকল মানুষের ন্যূনতম মৌলিক প্রয়ােজন মেটানাের প্রকৃষ্ট পন্থা বাস্তবায়নের রূপকল্প। এটি বাংলাদেশের জন্য স্বল্পোন্নত বা দরিদ্র দেশ থেকে সমৃদ্ধ ও ধনী দেশে রূপান্তরের জন্য মাথাপিছু আয় বা জাতীয় আয় বাড়ানোর অঙ্গীকার । এটি বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সোপান।এটি হচ্ছে একুশ শতকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা।
ডিজিটাল বাংলাদেশ একটি সময়োপযােগী পদক্ষেপ
আগামী ২০২১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হবে । ইতােমধ্যে দেশটি ওই সময় নাগাদ একটি ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্য ঠিক করেছে । । বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশকে উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন দেশসমূহের কাতারে স্হাপনের লক্ষ্যমাত্রা একটি সঠিক সিদ্ধান্ত বলে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে ।
বাংলাদেশে যখন ডিজিটাল ব্যবস্থা নিয়ে আলাপ - আলোচনা চলছে সেই মুহুর্তে এ ব্যবস্থা বিশ্বকে একটি পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে । একবিংশ শতাব্দীতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইলেক্ট্রনিক সংসদ আমরা দেখতে পাব , যে সংসদ জটিল কোনাে মুহূর্তে আইন প্রণয়নে ইলেকনিক গণভােটের সহায়তায় সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে । সুপারমার্কেটে যাওয়া ছাড়াই ইলেক্ট্রনিক শপিং - এর মাধ্যমে ৫০ % ভােক্তাদের বাড়িতে খাদ্য বা পণ্য পৌছে যাবে । উল্লেখ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী উন্নতির সর্বশেষ পূর্বাভাসমূলক গবেষণা Karls - Tube - based Fraunhofer for System and Research ( ISI ) ফেডারে মিনিস্টি ফর এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ পক্ষে পরিচালিত হয় । এ থেকেই বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে , ২০১২ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বে ৩o% , অফিস কর্মির ৫ কর্মদিবসের ২ দিন অফিস করবে বাড়িতে বসে । প্রতিদিন ও প্রত্যেকের জন্য সম্ভব না হলেও টেলিওয়ার্কিং আরাে সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হবে । মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তিও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রবেশ করবে ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জাতীয় অগ্রাধিকার
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রথম জাতীয় অঙ্গীকার হচ্ছে ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে দেশ থেকে দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করা এবং জনগণের মৌলিক অধিকার প্রাতিষ্ঠাসহ ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা পূরণ করে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা । ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য জাতীয় পর্যায়ে অবকাঠামােগত অগ্রাধিকার থাকতে হবে। সারাদেশের সকল ঘরে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারতে হবে । একই সঙ্গে প্রতিটি ঘরকে তার বা বেতার পদ্ধতিতে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় যুক্ত করতে হবে । এছাড়াও ,দেশের সকল অঞ্চলের জনগণের প্রত্যেককে ডিজিটাল যন্ত্রে সজ্জিত করাসহ ডিজিটাল ডিভাইড দূর করা জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে গণ্য হবে । জনগণের নিজস্ব সংযুক্তি এবং সরকারের সঙ্গে জনগণের সংযুক্তির পাশাপাশি সরকারের ডিজিটাল রূপান্তর , শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর ও ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত মানবসম্পদ তৈরি করা এবং কৃষি - শিল্প ও ব্যবসায়ের রূপান্তর অগ্রাধিকার হিসেবে গণ্য হবে ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্য
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হচ্ছে এটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্তরে স্তরে এর অনুন্নত জীবনধারাকে বদলে দিয়ে বাংলাদেশের সমাজকে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজে রপান্তর করা। কার্যত এদেশের মানুষের জীবনযাপন , শিক্ষা , স্বাস্থ্য , ব্যবস্থাপনা , কার্যপদ্ধতি , শিল্প - বাণিজ ও উৎপাদন , অর্থনীতি , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন ধারা ও জনগণের সরকারসহ সমাজের সকল স্তরের সব কাজকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর হল ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কিছু রাজনৈতিক লক্ষ্যও রয়েছে । সেইসব লক্ষ্যকে খুব সংক্ষেপে এভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে :
( ক ) জনগণের রাষ্ট্র : ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশকে একটি জনগণের রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা । এই রাষ্ট্রটি হবে প্রকৃতপক্ষেই জনগণের । এই রূপরেখার ভিত্তি হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ঘােষণা । এই রাষ্ট্রে ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি মৌলিক মানবিক অধিকার সংরক্ষণসহ সকল সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার সকল প্রকারের নিশ্চয়তা থাকবে । এই রাষ্ট্রের সকল স্তরে বৈষম্যহীনভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এবং জনগণের কাছে এই প্রযুক্তি সহজলভ্য ও সুলত করা হবে ।
( খ ) মৌলিক চাহিদা রাষ্ট্রকেই পূরণ করতে হবে : রাষ্ট্রকে জনগণের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা পুরণ , অন্ন - বস্ত্র বাসস্থান - শিক্ষা ও চিকিৎসার ন্যূনতম দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে । জনগণ যাতে তাদের জীবন জীবিকানির্বাহ করার মতো উপার্জন করতে সক্ষম হয় তার জন্য তাকে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শেখাতে হবে এবং সেই সঙ্গে প্রযুক্তি তার কাছে রাষ্ট্রকেই সহজলভ্য করতে হবে । দরিদ্র জনগণকে জ্ঞানকর্মী বা ডিজিটাল প্রযুক্তিকর্মী , মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক শিল্প , বাণিজ্যসহ কৃষি , শিক্ষা , টেলিযােগাযোগ ইত্যাদি খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করতে হবে । সমাজে পেশীশক্তির প্রভাবের বদলে জ্ঞানশক্তির প্রভাব বিরাজ করবে । দারিদ্র্য দূর করা , জীবনমান উন্নত করা , সকল জনগণকে ডিজিটাল যুগের শিক্ষা প্রদান করা , সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং উন্নত আয়ের ডিজিটাল জীবনধারা প্রতিষ্ঠা করাসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রের বৈষম্য দূর করাসহ সকল ধরন ও প্রকারের ডিজিটাল ডিভাইড দূর করতে হবে ।
( গ ) রাজনীতির ডিজিটাল ধারা :ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে সরকার ও জাতীয় সংবাদসহ সকল রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও ব্যবস্থা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত করা এবং রাজনীতির ডিজিটাল ধারা প্রতিষ্ঠা করা । জনগণ এই পদ্ধতিতে সাল সময়েই সংসদ, সরকার ও রাজনীতিতে ইন্টারএ্যাকটিভ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ বলতে পারবে ।
আগামী ২০২১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হবে । ইতােমধ্যে দেশটি ওই সময় নাগাদ একটি ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্য ঠিক করেছে । । বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশকে উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন দেশসমূহের কাতারে স্হাপনের লক্ষ্যমাত্রা একটি সঠিক সিদ্ধান্ত বলে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে ।
বাংলাদেশে যখন ডিজিটাল ব্যবস্থা নিয়ে আলাপ - আলোচনা চলছে সেই মুহুর্তে এ ব্যবস্থা বিশ্বকে একটি পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে । একবিংশ শতাব্দীতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইলেক্ট্রনিক সংসদ আমরা দেখতে পাব , যে সংসদ জটিল কোনাে মুহূর্তে আইন প্রণয়নে ইলেকনিক গণভােটের সহায়তায় সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে । সুপারমার্কেটে যাওয়া ছাড়াই ইলেক্ট্রনিক শপিং - এর মাধ্যমে ৫০ % ভােক্তাদের বাড়িতে খাদ্য বা পণ্য পৌছে যাবে । উল্লেখ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী উন্নতির সর্বশেষ পূর্বাভাসমূলক গবেষণা Karls - Tube - based Fraunhofer for System and Research ( ISI ) ফেডারে মিনিস্টি ফর এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ পক্ষে পরিচালিত হয় । এ থেকেই বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে , ২০১২ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বে ৩o% , অফিস কর্মির ৫ কর্মদিবসের ২ দিন অফিস করবে বাড়িতে বসে । প্রতিদিন ও প্রত্যেকের জন্য সম্ভব না হলেও টেলিওয়ার্কিং আরাে সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হবে । মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তিও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রবেশ করবে ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জাতীয় অগ্রাধিকার
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রথম জাতীয় অঙ্গীকার হচ্ছে ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে দেশ থেকে দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করা এবং জনগণের মৌলিক অধিকার প্রাতিষ্ঠাসহ ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা পূরণ করে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা । ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য জাতীয় পর্যায়ে অবকাঠামােগত অগ্রাধিকার থাকতে হবে। সারাদেশের সকল ঘরে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারতে হবে । একই সঙ্গে প্রতিটি ঘরকে তার বা বেতার পদ্ধতিতে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় যুক্ত করতে হবে । এছাড়াও ,দেশের সকল অঞ্চলের জনগণের প্রত্যেককে ডিজিটাল যন্ত্রে সজ্জিত করাসহ ডিজিটাল ডিভাইড দূর করা জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে গণ্য হবে । জনগণের নিজস্ব সংযুক্তি এবং সরকারের সঙ্গে জনগণের সংযুক্তির পাশাপাশি সরকারের ডিজিটাল রূপান্তর , শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর ও ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত মানবসম্পদ তৈরি করা এবং কৃষি - শিল্প ও ব্যবসায়ের রূপান্তর অগ্রাধিকার হিসেবে গণ্য হবে ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্য
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হচ্ছে এটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্তরে স্তরে এর অনুন্নত জীবনধারাকে বদলে দিয়ে বাংলাদেশের সমাজকে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজে রপান্তর করা। কার্যত এদেশের মানুষের জীবনযাপন , শিক্ষা , স্বাস্থ্য , ব্যবস্থাপনা , কার্যপদ্ধতি , শিল্প - বাণিজ ও উৎপাদন , অর্থনীতি , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন ধারা ও জনগণের সরকারসহ সমাজের সকল স্তরের সব কাজকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর হল ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কিছু রাজনৈতিক লক্ষ্যও রয়েছে । সেইসব লক্ষ্যকে খুব সংক্ষেপে এভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে :
( ক ) জনগণের রাষ্ট্র : ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশকে একটি জনগণের রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা । এই রাষ্ট্রটি হবে প্রকৃতপক্ষেই জনগণের । এই রূপরেখার ভিত্তি হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ঘােষণা । এই রাষ্ট্রে ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি মৌলিক মানবিক অধিকার সংরক্ষণসহ সকল সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার সকল প্রকারের নিশ্চয়তা থাকবে । এই রাষ্ট্রের সকল স্তরে বৈষম্যহীনভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এবং জনগণের কাছে এই প্রযুক্তি সহজলভ্য ও সুলত করা হবে ।
( খ ) মৌলিক চাহিদা রাষ্ট্রকেই পূরণ করতে হবে : রাষ্ট্রকে জনগণের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা পুরণ , অন্ন - বস্ত্র বাসস্থান - শিক্ষা ও চিকিৎসার ন্যূনতম দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে । জনগণ যাতে তাদের জীবন জীবিকানির্বাহ করার মতো উপার্জন করতে সক্ষম হয় তার জন্য তাকে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শেখাতে হবে এবং সেই সঙ্গে প্রযুক্তি তার কাছে রাষ্ট্রকেই সহজলভ্য করতে হবে । দরিদ্র জনগণকে জ্ঞানকর্মী বা ডিজিটাল প্রযুক্তিকর্মী , মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক শিল্প , বাণিজ্যসহ কৃষি , শিক্ষা , টেলিযােগাযোগ ইত্যাদি খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করতে হবে । সমাজে পেশীশক্তির প্রভাবের বদলে জ্ঞানশক্তির প্রভাব বিরাজ করবে । দারিদ্র্য দূর করা , জীবনমান উন্নত করা , সকল জনগণকে ডিজিটাল যুগের শিক্ষা প্রদান করা , সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং উন্নত আয়ের ডিজিটাল জীবনধারা প্রতিষ্ঠা করাসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রের বৈষম্য দূর করাসহ সকল ধরন ও প্রকারের ডিজিটাল ডিভাইড দূর করতে হবে ।
( গ ) রাজনীতির ডিজিটাল ধারা :ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে সরকার ও জাতীয় সংবাদসহ সকল রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও ব্যবস্থা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত করা এবং রাজনীতির ডিজিটাল ধারা প্রতিষ্ঠা করা । জনগণ এই পদ্ধতিতে সাল সময়েই সংসদ, সরকার ও রাজনীতিতে ইন্টারএ্যাকটিভ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ বলতে পারবে ।
ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচি
ডিজিটাল সরকার প্রতিষ্ঠা করে সরকারের কাজ করার পদ্ধতি ডিজিটাল করা এবং জনগণের দোরগোড়ায় সরকারের সেবা পৌঁছানো।এর মাঝে ডিজিটাল ভূমিব্যবস্থা , বিচার ব্যবস্থা, ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা,ডিজিটাল নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ সরকারের সকল কাজকে রূপান্তর করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মাঝে রয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করা। শিক্ষার বিষয়বস্তু এবং শিক্ষাদান পদ্ধতিতে রূপান্তর করা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার একটি অগ্রাধিকার। কৃষি শিল্প ও বাণিজ্য ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তর করে বিদ্যমান আর্থিক কাঠামোকে জ্ঞানভিত্তিক মেধাকেন্দ্রিক সৃজনশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য।২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে অর্থ ও শারীরিক শক্তির বদলে মেধা ও জ্ঞানের শক্তির প্রাধান্য থাকবে। কৃষি ভিত্তিক একটি সমাজ থেকে বাংলাদেশে একটি সৃজনশীল ও মেধা ভিত্তিক শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়ে মানব সভ্যতার ডিজিটাল যুগে নেতৃত্ব দেবে। মানুষের বিদ্যমান কর্মসংস্থান কৃষিতে কমবে, শিল্পে বাড়বে এবং মেষাবধি শিল্প থেকেও অধিকতর হবে সেবাখাতে। জাতীয় আয়ের এর বৃহদাংশ আসবে মেধাজাত খাত থেকে।
অগ্রগতি
সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘােষণার প্রথম বছরে দৃঢ়তার সঙ্গে গড়ে তুলেছে এর প্রথম সােপান বা ভিত্তি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পূর্ববর্তী সরকার দুটির সকল প্রকারের স্থবিরতা কাটিয়ে উঠে সরকার আইসিটি নীতিমালা অনুমােদন করেছে এবং সেটি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । এর সঙ্গে ই - কমার্স চালু করা , ডিজিটাল কৃষিপ্রযুক্তি চালুকরাসহ নানারকম পদক্ষেপ নিয়েছে।
রপকল্প ( ভিশন ২০২১ ) অনুযায়ী কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা
ভিশন ২০২১ অনুযায়ী কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা নিচে দেওয়া হল:
( ১ ) ২০১০ সালের মধ্যে প্রাথমিক স্তরে নিট ভর্তির হার হবে ১০০ % । ( ২ ) ২০১১ সালের মধ্যে দেশের সকল মানুষের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা ।
( ৩ ) ২০১২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে ।
( ৪ ) ২০১৩ সালের মধ্যে প্রতিটি বাড়িকে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থায় আওতায় আনা হবে ।
( ৫ ) ২০১৩ সালে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হবে ৮ % ।
( ৬ ) ২০১৭ সালে এই হার ১০ % এ উন্নত করে অব্যাহত রাখা হবে । ( ৭ ) ২০১৩ সালে বাংলাদেশে বিদ্যুতের ব্যবহার হবে ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০১৫ সালে ৮ হাজার মেগাওয়াট ।
( ৮ ) ২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ ২০ হাজার মেগাওয়াট ধরে নিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ।
( ৯ ) ২০২১ সালে জাতীয় আয়ের বর্তমান হিস্যা কৃষিতে ২২ ; শিল্পে ২৮ ও সেবা খাতে ৫০ % - এর পরিবর্তে হবে যথাক্রমে ১৫,৪০ এবং ৪৫ %।
(১০) ২০২১ সালে বেকারত্বের হার বর্তমান ৪০% থেকে ১৫ শতাংশে নেমে আসবে।
(১১)২০২১ সালে কৃষিখাতে শ্রমশক্তি ৪৮ % থেকে কমে দাঁড়াবে ৩০ % ।
( ১২ ) ২০২১ সাল নাগাদ বর্তমান দারিদ্রের হার ৪৫% থেকে ১৫% নামবে।
(১৩)২০২১ সালের মধ্যে দেশের ৮৫ শতাংশ নাগরিকের মানসম্পন্ন পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করা হবে।
( ১৪ ) ২০২১ সালে তথ্য - প্রযুক্তিতে' ডিজিটাল বাংলাদেশ ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ ।
( ১৫ ) ২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতিদিন ন্যূনতম ২১২২ কিলাে ক্যালােরির উর্ধ্বে খাদ্য নিশ্চিত করা হবে ।
( ১৬ ) ২০২১ সালের মধ্যে সকল প্রকার সংক্রামক ব্যাধি সম্পূর্ণ নির্মূল করা হবে ।
( ১৭ ) 2021 সালে গড় আয়ুস্কাল ৭০ এর কোঠায় উন্নীত হবে । শিশু মৃত্যুর হার ৫৪ থেকে ১৫ % এ নামিয়ে আনা হবে ;
( ১৮ ) ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ - প্রত্যাশা ও বাস্তবতা
একটি দেশকে ডিজিটাল রূপান্তরের অর্থ হলো তাকে একটি ইস্টেট পরিবর্তন করা। অর্থাৎ দেশটির শাসন ব্যবস্থা , শিক্ষা, বাণিজ্য, কৃষি ইত্যাদি পরিচালনায় কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে মােবাইল ফোন , ইন্টারনেট, কম্পিউটার, ই-লার্নিং, ই-গভর্নেন্স, ইত্যাদির সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির অন্যতম অবদান হল ইন্টারনেট। দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা, গ্রামে তথ্যপ্রযুক্তির মহা প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।এর জন্য ছড়িয়ে দিতে হবে কম্পিউটারের সঙ্গে অনলাইন বা ইন্টারনেট। নেটওয়ার্ক সুবিধার জন্য প্রয়োজন চট্টগ্রামে এসে থেমে থাকা ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে দেশের সর্বত্র অর্থাৎ জেলা, উপজেলা, গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দেয়া, আর এটা সম্ভব ই-গভর্নমেন্ট এর মাধ্যমে।
ই-গভর্নমেন্ট হচ্ছে সেই সরকার ব্যবস্থা যার মাধ্যমে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বচ্ছ এবং শ্রদ্ধাশীল থাকবে জনসংশ্লিষ্ট গণতন্ত্রের প্রতি।জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অস্বচ্ছ সরকারি কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমােদন উন্মুক্ত সরকার বা ই-গভর্নমেন্টের নেই । ই - গভর্নমেন্ট এমন এক ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা যার মাধ্যমে সরকারের সব কাজে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে।সরকারি কর্মকাণ্ডে গােপন অনুশীলন বন্ধ করার জন্য আইসিটির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে । রেকর্ড থেকে শুরু করে সরকারি সব অফিস আদালতের সর্বক্ষেত্রে যদি তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, অর্থাৎ ই-গভর্নেন্স চালু করা যায় তাহলে দুর্নীতির ফাঁকফোকর অনেকাংশে কমে আসবে । আগের চেয়ে স্বচ্ছতা ও । দিহিতা আসবে । এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সফটওয়্যার শিল্পটি পৃষ্ঠপােষকতা পাওয়া স্বাভাবিক হবে। বাংলাদেশও সফটওয়্যার রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে । দেশের শিক্ষিত বেকাররা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে । মাথাপিছু আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে । দূরত্বকে জয় করে সেবা মানুষের দোরগােড়ায় পৌছে দেয়ার জন্যই ই - গভর্নেন্স ।
অগ্রগতি
সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘােষণার প্রথম বছরে দৃঢ়তার সঙ্গে গড়ে তুলেছে এর প্রথম সােপান বা ভিত্তি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পূর্ববর্তী সরকার দুটির সকল প্রকারের স্থবিরতা কাটিয়ে উঠে সরকার আইসিটি নীতিমালা অনুমােদন করেছে এবং সেটি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । এর সঙ্গে ই - কমার্স চালু করা , ডিজিটাল কৃষিপ্রযুক্তি চালুকরাসহ নানারকম পদক্ষেপ নিয়েছে।
রপকল্প ( ভিশন ২০২১ ) অনুযায়ী কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা
ভিশন ২০২১ অনুযায়ী কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা নিচে দেওয়া হল:
( ১ ) ২০১০ সালের মধ্যে প্রাথমিক স্তরে নিট ভর্তির হার হবে ১০০ % । ( ২ ) ২০১১ সালের মধ্যে দেশের সকল মানুষের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা ।
( ৩ ) ২০১২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে ।
( ৪ ) ২০১৩ সালের মধ্যে প্রতিটি বাড়িকে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থায় আওতায় আনা হবে ।
( ৫ ) ২০১৩ সালে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হবে ৮ % ।
( ৬ ) ২০১৭ সালে এই হার ১০ % এ উন্নত করে অব্যাহত রাখা হবে । ( ৭ ) ২০১৩ সালে বাংলাদেশে বিদ্যুতের ব্যবহার হবে ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০১৫ সালে ৮ হাজার মেগাওয়াট ।
( ৮ ) ২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ ২০ হাজার মেগাওয়াট ধরে নিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ।
( ৯ ) ২০২১ সালে জাতীয় আয়ের বর্তমান হিস্যা কৃষিতে ২২ ; শিল্পে ২৮ ও সেবা খাতে ৫০ % - এর পরিবর্তে হবে যথাক্রমে ১৫,৪০ এবং ৪৫ %।
(১০) ২০২১ সালে বেকারত্বের হার বর্তমান ৪০% থেকে ১৫ শতাংশে নেমে আসবে।
(১১)২০২১ সালে কৃষিখাতে শ্রমশক্তি ৪৮ % থেকে কমে দাঁড়াবে ৩০ % ।
( ১২ ) ২০২১ সাল নাগাদ বর্তমান দারিদ্রের হার ৪৫% থেকে ১৫% নামবে।
(১৩)২০২১ সালের মধ্যে দেশের ৮৫ শতাংশ নাগরিকের মানসম্পন্ন পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করা হবে।
( ১৪ ) ২০২১ সালে তথ্য - প্রযুক্তিতে' ডিজিটাল বাংলাদেশ ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ ।
( ১৫ ) ২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতিদিন ন্যূনতম ২১২২ কিলাে ক্যালােরির উর্ধ্বে খাদ্য নিশ্চিত করা হবে ।
( ১৬ ) ২০২১ সালের মধ্যে সকল প্রকার সংক্রামক ব্যাধি সম্পূর্ণ নির্মূল করা হবে ।
( ১৭ ) 2021 সালে গড় আয়ুস্কাল ৭০ এর কোঠায় উন্নীত হবে । শিশু মৃত্যুর হার ৫৪ থেকে ১৫ % এ নামিয়ে আনা হবে ;
( ১৮ ) ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ - প্রত্যাশা ও বাস্তবতা
একটি দেশকে ডিজিটাল রূপান্তরের অর্থ হলো তাকে একটি ইস্টেট পরিবর্তন করা। অর্থাৎ দেশটির শাসন ব্যবস্থা , শিক্ষা, বাণিজ্য, কৃষি ইত্যাদি পরিচালনায় কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে মােবাইল ফোন , ইন্টারনেট, কম্পিউটার, ই-লার্নিং, ই-গভর্নেন্স, ইত্যাদির সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির অন্যতম অবদান হল ইন্টারনেট। দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলা, গ্রামে তথ্যপ্রযুক্তির মহা প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।এর জন্য ছড়িয়ে দিতে হবে কম্পিউটারের সঙ্গে অনলাইন বা ইন্টারনেট। নেটওয়ার্ক সুবিধার জন্য প্রয়োজন চট্টগ্রামে এসে থেমে থাকা ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে দেশের সর্বত্র অর্থাৎ জেলা, উপজেলা, গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দেয়া, আর এটা সম্ভব ই-গভর্নমেন্ট এর মাধ্যমে।
ই-গভর্নমেন্ট হচ্ছে সেই সরকার ব্যবস্থা যার মাধ্যমে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বচ্ছ এবং শ্রদ্ধাশীল থাকবে জনসংশ্লিষ্ট গণতন্ত্রের প্রতি।জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অস্বচ্ছ সরকারি কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমােদন উন্মুক্ত সরকার বা ই-গভর্নমেন্টের নেই । ই - গভর্নমেন্ট এমন এক ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা যার মাধ্যমে সরকারের সব কাজে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে।সরকারি কর্মকাণ্ডে গােপন অনুশীলন বন্ধ করার জন্য আইসিটির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে । রেকর্ড থেকে শুরু করে সরকারি সব অফিস আদালতের সর্বক্ষেত্রে যদি তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, অর্থাৎ ই-গভর্নেন্স চালু করা যায় তাহলে দুর্নীতির ফাঁকফোকর অনেকাংশে কমে আসবে । আগের চেয়ে স্বচ্ছতা ও । দিহিতা আসবে । এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সফটওয়্যার শিল্পটি পৃষ্ঠপােষকতা পাওয়া স্বাভাবিক হবে। বাংলাদেশও সফটওয়্যার রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে । দেশের শিক্ষিত বেকাররা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে । মাথাপিছু আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে । দূরত্বকে জয় করে সেবা মানুষের দোরগােড়ায় পৌছে দেয়ার জন্যই ই - গভর্নেন্স ।
অসাধারণ রচনা।ধন্যবাদ
ReplyDeleteধন্যবাদ
ReplyDeleteWell
ReplyDeletekhub valo lagse rochona ta
ReplyDelete