[●]২১ শে ফেব্রুয়ারি অনুচ্ছেদ||আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ
২১ শে ফেব্রুয়ারি অনুচ্ছেদ||আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ
একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির জীবনে এক মহান দিন।১৯৫২ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি মাতৃভাষা রক্ষার জন্য রাজপথে নেমেছিল। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র বাঙালিরাই সেই গৌরবময় জাতি,যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল। আমাদের জাতীয় জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিশ্বের অন্যান্য জাতি এ সম্পর্কে খুব কমই জানত। কিন্তু কানাডা প্রবাসী বাঙালি জনাব রফিকুল ইসলাম একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনার আলোকে সকল মাতৃভাষাকে কিভাবে সম্মান দেখানো যায় তার একটি পথ বের করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।অত:পর তিনি বেশকিছু বাংলাদেশী, অন্যান্য দেশ ও ভাষার ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করে সাতটি দেশের ১০ জন ব্যক্তিকে নিয়ে "Mother Language Lovers of the World'নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটি কানাডার এম্বেসি মাধ্যমে একটি প্রস্তাব জাতিসংঘে পাঠায়, যার মূল কথা ছিল বিশ্বের প্রতিটি ভাষার প্রতি সম্মান জানানোর জন্য প্রতি বছর বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস পালন পালন করা হোক এবং যেহেতু বাঙালিরা প্রাণ উৎসর্গ করে তাদের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছে, সেহেতু একুশে ফেব্রুয়ারিকে' আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, হিসেবে ঘোষণা করা হোক। অতঃপর বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৯ই সেপ্টেম্বর,১৯৯৯ একুশে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে ঘোষণা করার ঐতিহাসিক আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি বাংলাদেশ থেকে ফ্যাক্সযোগে পাঠানো হয়। এরপর প্যারিসে ইউনেস্কোর ১৫৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী একুশে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করেন। অবশেষে নানা তর্ক-বিতর্ক আলোচনা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমর্থনে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কোর অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে একুশে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে পালনের সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে শেষ পর্যায়ে জাতিসংঘের ১৮৮টি সদস্য দেশ সমর্থন দান করেন।২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী একুশে ফেব্রুয়ারি 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। একুশের এই স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার নিমিত্তে বাঙ্গালীদের ত্যাগেরই স্বীকৃতি। জাতি হিসেবে এ মর্যাদা যেমন আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের, তেমনি এ মর্যাদা সমুন্নত রাখা আমাদের জাতীয় কর্তব্য।
Continue
Continue
Comments
Post a Comment